ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির যুগে এখন আরও সহজ এবং আরও উন্নত। আগের দিনে একটি পাসপোর্ট বানাতে হলে তাহলে দালাল ধরতে হল এবং দালালের হাতে বিভিন্ন সমস্যায় সম্মূখীন হতে হত। তবে বর্তমানে তা হলে হয় না। যদিও আপনি যদি একটু কষ্ট করে কি ভাবে অনলাইনে যেভাবে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) করা যায় এটি জেনে থাকেন তাহলে আর বিভিন্ন সমস্যায় সম্মুখীন হতে হবে না। আর আপনি ও খুব সহজেই পারবেন। কারণ অনলাইনে পাসপোর্ট পাওয়া অনেক অনেক সহজ একটা কাজ। পাসপোর্ট হাতে পাওয়াসহ সব মিলিয়ে আপনাকে মাত্র তিনদিন যেতে হবে ।আর সাথে টুকিটাকি যদি জানা থাকে তাহলে আর কথাই নেই। এবার এক নজরে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে নীতিমালা গুলু দেখে নিন।
আসেন, একদম শুরু থেকে শুরু করি অনলাইনে পাসপোর্ট ফর্ম পূরণ করা এবং পরের ধাপের কাজগুলো নিয়ে।
নির্দেশনা ভালোভাবে দেখুন , সতর্কতার সাথে একাউন্ট করুন । আপনার নাম ও ব্যক্তিগত তথ্যাদি ( যেমন নামের বানান, প্যারেন্টস এর নাম ) যেন শিক্ষাগত সার্টিফিকেটের মতই হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
***আবারো বলছি , সাদা পোষাক পরবেন না , ফর্মাল পোষাক পরার চেষ্টা করুন।
পুলিশ ভেরিফিকেশানই আসলে একটা ঝামেলার কাজ। যদি আপনার স্থায়ী আর বর্তমান ঠিকানা আলাদা হয় , তবে দুই জায়গাতেই আপনার ভেরিফিকেশান হয়ে থাকে। পুলিশের এস বি ( স্পেশাল ব্রাঞ্চ) এই কাজটা করে থাকে।
আসেন, একদম শুরু থেকে শুরু করি অনলাইনে পাসপোর্ট ফর্ম পূরণ করা এবং পরের ধাপের কাজগুলো নিয়ে।
প্রথম ধাপ : ব্যাংকে টাকা জমা দেয়া
সোনালী ব্যাংকের যে কোন শাখায় পাসপোর্ট আবেদনের ফি হিসাবে টাকা জমা দিতে হবে। রেগুলার ফি ৩০০০/- টাকা ( ১ মাসের মধ্যে পাসপোর্ট পেতে হলে) আর ইমারজেন্সি ফি ৬০০০/- টাকা ( ১৫ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেতে হলে) ।
অনলাইনে ফরম পূরণ করার আগে অবশ্যই ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে রিসিব নিতে হবে তা না হলে, আপনি অনলাইনে ফর্ম পূরণ করার সময় টাকা জমা দেয়ার তারিখ এবং জমাদানের রিসিটের নাম্বার উল্লেখ করতে পারবেন না। তাই টাকা আগে জমা দিতে হবে তাহলে আপনি একেবারে ফরম পূরণ করতে পারবেন।
দ্বিতীয় ধাপ - অনলাইনে ফর্ম পূরণ
অনলাইনে ফরম পূরণের জন্য প্রথমেই পাসপোর্ট অফিসের এই সাইটে ভিজিট করতে হবে
নির্দেশনা ভালোভাবে দেখুন , সতর্কতার সাথে একাউন্ট করুন । আপনার নাম ও ব্যক্তিগত তথ্যাদি ( যেমন নামের বানান, প্যারেন্টস এর নাম ) যেন শিক্ষাগত সার্টিফিকেটের মতই হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
মেইল এড্রেস আর মোবাইল নাম্বার দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই রেগুলারটা দেবেন।
টাকা জমা দেয়ার তারিখ এবং রিসিট নাম্বার উল্লেখ করুন।
সবশেষে আপনি যেদিন ছবি তোলা ও হাতের ছাপ দেয়ার জন্য বায়োমেট্রিক টেস্ট দিতে যেতে চান, সুবিধামত সেইদিনটা নির্বাচন করে সাবমিট করুন। অর্থ্যাৎ আপনি নিজের পছন্দসই সময়েই যেতে পারছেন ! ব্যাপারটা দারূণ না ?
এবার , পুনরায় চেক করুন। দেখুন সব তথ্য ঠিক আছে কিনা।
সবশেষে সাবমিট করুন । সফলভাবে সাবমিশন শেষ হলে পূরণকৃত ফর্মের একটি পিডিএফ কপি আপনার মেইলে চলে আসবে । এই ধাপ এইখানেই শেষ।
বিশেষ কথা:*** অনলাইনে একাউন্ট খোলার পরপরই আপনাকে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড জানিয়ে দেবে । সেটা সংরক্ষণ করুন। আর ছবি তোলার জন্য যেদিন সময় দেবেন সেদিনটা ফ্রি রাখবেন।
তৃতীয় ধাপ – জমা দেয়ার আগে ফর্মের প্রিন্ট এবং সত্যায়ন
আপনার পূরণকৃত ফর্মের যেই পিডিএফ কপিটা পেয়েছেন, সেটার ২ কপি কালার প্রিন্ট করে ফেলুন। যেসব জায়গা হাতে পূরণ করতে হবে সেগুলো করে ফেলুন । আপনার সিগনেচার অথবা নিজের নাম দিয়ে দিন।
এবার নিজের চার-কপি ছবি , জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং পাসপোর্ট ফর্ম নিয়ে পরিচিত কোন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার কাছ থেকে সত্যায়িত করে নিন। পরিচিত কাউকে দিয়ে সসত্যায়ন করানো দরকার এই কারণে যে, ঐ কর্মকর্তার নাম , যোগাযোগ ও ফোন নাম্বার ফর্মে লিখতে হয়।
সত্যায়ন শেষে পুরো ফর্মটি পুনরায় চেক করুন।
সত্যায়িত ছবি এবং ব্যাংকের রিসিট আঠা দিয়ে ফর্মের সাথে যুক্ত করুন। সাথে জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপিটি নিন।
আপনার ফর্ম জমা এখন দেয়ার জন্য প্রস্তুত।
চতুর্থ ধাপ – ছবি তোলা এবং অন্যান্য
আপনার নির্বাচন করা তারিখে সকাল সকাল পাসপোর্ট অফিসে চলে যান ।খেয়াল করবেন সাদা পোষাক পরবেন না, এতে কোন না কোন একটা সমস্যা হতে পারে। তাই ফর্মাল পোষাক পরার চেষ্টা করুন।
সকাল ৯ টার দিকে গেলেই হবে। কোন লাইনে দাঁড়াতে হবে না আপনাকে । সরাসরি মেইন গেইট দিয়ে মূল অফিসে যান। সেখানে দায়িত্বরত সেনা সদস্যকে জিজ্ঞেস করুন কোন রুমে যাবেন ।
বিশেষ ধারণা:
প্রথমে আপনাকে আটতলায় যেয়ে ফর্ম দেখিয়ে আনতে হবে। খুবই অল্প সময়ের কাজ । ৮০৩ নাম্বার রুম । সিরিয়াল নেবেন।
এবার ৮ তলার থেকে আসতে বলবে ৩ তলায় । সেখানে এসেই আসল কাজ ( আমার ছিল ৩০১ নং রুম)। প্রথমে আপনার ফর্মটি চেক করবে এবং সাইন করে দেবে।
সাইন শেষে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে ছবি তোলার জন্য কোন রুমে যাবে। ঐ রুমগুলো ঠিক পাশেই। সিরিয়াল আসলে ছবি তুলুন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিন। ব্যস , কাজ শেষ !
এবার আপনাকে পাসপোর্ট রিসিভের একটা রিসিট দেবে। সেটা যত্ন করে রাখুন । পুলিশ ভেরিফিকেশান সাপেক্ষে, রিসিট পাওয়ার একমাস বা ১৫ দিনের মধ্যেই আপনি পাসপোর্ট পাবেন ।
***আবারো বলছি , সাদা পোষাক পরবেন না , ফর্মাল পোষাক পরার চেষ্টা করুন।
আর সাথে জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপিসহ সত্যায়িত কপিগুলো নিয়ে যান। তিনতলায় যেয়ে সেখানকার সেনাসদস্যের কাছ থেকে দেখিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন , সব সংযুক্তি ঠিক আছে কিনা।
সাথে অবশ্যই কলম রাখুন।
আঠা, স্ট্যাপলার, এক্সট্রা ছবিও সাথে রাখুন।
আর যারা সরকারী কর্মকর্তা বা শিশুসহ যাচ্ছেন , তাদের কিছু আলাদা কাগজ লাগবে । সেটার জন্য নির্দেশনা দেখুন । কিংবা ৮০৩ এ যোগাযোগ করুন।
পঞ্চম ধাপ – পুলিশ ভেরিফিকেশান ও পাসপোর্ট রিসিভ তারিখ
পুলিশ ভেরিফিকেশানই আসলে একটা ঝামেলার কাজ। যদি আপনার স্থায়ী আর বর্তমান ঠিকানা আলাদা হয় , তবে দুই জায়গাতেই আপনার ভেরিফিকেশান হয়ে থাকে। পুলিশের এস বি ( স্পেশাল ব্রাঞ্চ) এই কাজটা করে থাকে।
এবং এই কাজটা করতে গেলে পুলিশ টিপ্স হিসাবে টাকা চেয়ে বসে। খুবই দুঃখের একটা ব্যাপার । সেটা ৫০০-১০০০ পর্যন্ত হতে পারে !!!!!
তবে পরিচয় অথবা কোন সম্পর্ক থাকলে এটা এড়ানো সম্ভব। আপনি কীভাবে তাদের ফেইস করছেন সেটার উপর নির্ভর করে। সরাসরি বলে দিতে পারেন যে, এইটা আপনার দায়িত্ব, তো টাকা দেয়ার প্রশ্ন কেন। কিংবা বলতে পারেন যে, আপনি ছাত্র , টাকা দেয়া সম্ভব না । ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি !
যাই হোক, ভেরিফিকেশান শেষ হলে আপনার মোবাইলে এস এম এস আসবে। যেদিন এস এম এস আসবে তারপরেই আপনি পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।
ব্যস, এইবার পাসপোর্ট হাতে নেয়ার পালা।
ষষ্ঠ ধাপ –পাসপোর্ট সংগ্রহ
এইখানে কাজ সহজ । পাসপোর্ট অফিসে চলে যান। লাইনে দাঁড়ান।
সাথে রিসিট আর কলম রাখুন । লাইন ধরে প্রবেশ করুন।
রিসিট জমা দিন। অপেক্ষা করুন।
এবার আপনার নাম ডাকবে ।
সাইন করুন , বুঝে নিন আপনার পাসপোর্ট ।
বিশেষ কথা:--- হাতে পেয়েই সবার আগে চেক করুন আপনার ইনফোগুলো ঠিক আছে কিনা। নিজের এবং পিতা-মাতার নাম, ঠিকানা এবং অন্যান্য সব তথ্য-গুলো মিলিয়ে নিন। এবং সব ঠিক থাকলে আপনি খুঁশিতে বাড়িতে চলে আসেন।
জরুরী কথা:----
০১) আপনার বর্তমান ঠিকানা যদি ঢাকা হয় , তাহলে এখান থেকেই পাসপোর্ট করতে পারেন । আলাদা করে দেশের বাড়ির জেলা অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না ।
০২) ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার জন্য যে স্লিপ লাগে , সেখানে আলাদা একাউন্ট নম্বরের প্রয়োজন নেই ।নতুন পাসপোর্ট করা বা রিনিউ এর জন্য আলাদা স্লিপই থাকে ।
০৩) GO: Government order
NOC: NO Objection Certificate
PDS: Proof of retired Date
সরকারী, আধাসরকারী, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার স্থায়ী কর্মকর্তা/কর্মচারী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারী চাকুরীজীবীরা এই ঘর পুরণ করবেন। আর কমেন্ট থেকে জানা গেল যে সরকারী কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট নীল রঙের । পুলিশ ভেরিফিকেশান এর ঝামেলা নাই ।
1 Comments
Pending Final Approval
ReplyDeleteএটা অনেক দিন থেকে দেখাচ্ছে,
আপনার কোন অভিয়োগ/মতামত থাকলে, নিচে কমেন্ট বক্সে লিখুন । ধন্যবাদ